বিস্ফোরণে ঘটছে অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসেও। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিন আগেই পেজার বিস্ফোরণে রক্তাক্ত হয়েছে লেবানন। প্রাণ গিয়েছে ১২ জনের। আহত ৪ হাজারের কাছাকাছি। হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে জখমদের ভিড়ে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের নতুন করে বিস্ফোরণ। এবার দুমদাম ওয়াকি-টকি ফেটে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। আহত ৪৫০। বিস্ফোরণে ঘটছে অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসেও। ফলে কোথায় কোথায় বিস্ফোরক লুকানো রয়েছে, সেনিয়ে শুরু হয়েছে আতঙ্ক। সেদেশের জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লাকে টার্গেট করেই এই হামলা চালানো হচ্ছে। এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রের আঙুল উঠেছে ইজরায়েলের দিকে। এই পরিস্থিতি ‘নয়া যুদ্ধের’ হুঙ্কার দিলেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্ট। গাজা যুদ্ধের পাশাপাশি হেজবোল্লার বিরুদ্ধে লেবাননে এবার নয়া লড়াই শুরু করল তেল আভিভ!
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ লেবাননের রাজধানী বেইরুট-সহ বেশ কিছু এলাকায় পর পর বিস্ফোরণ হতে শুরু করে। দুমদাম করে ফাটতে থাকে পেজার। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সকলে। এই ঘটনায় হেজবোল্লা জঙ্গিদের পাশাপাশি আহত হন বহু সাধারণ মানুষ। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন ইরানের রাষ্ট্রদূতও। তার একদিনের মাথায় বুধবার ফের সিরিয়াল ব্লাস্টে কেঁপে ওঠে লেবানন। হেজবোল্লাদের নিশানা করে ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। দেশটির পূর্ব প্রান্তের বেশ কিছু এলাকায় টেলিফোনেও বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় জেহাদিদের পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে সাধারণ মানুষের। ইতিমধ্যেই পালটা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে ইজরায়েলের এক সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে হেজবোল্লা।
গত ১১ মাস ধরে গাজায় হামাসের সঙ্গে ভয়ংকর লড়াই করছে ইজরায়েল। এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে তৈরি হয়েছে জটিল সমীকরণ। হামাসের পাশে থাকার নামে ইরানের মদতে লেবাননের হেজবোল্লা, ইয়েমেনের হাউথিরা অস্ত্র ধরেছে তেল আভিভের বিরুদ্ধে। এই মুহূর্তে ইজরায়েলকে চার ফ্রন্টে লড়াই করতে হচ্ছে। গত আগস্ট মাসে ইজরায়েলের বুকে ৩২০টি রকেট ছুড়েছিল হেজবোল্লা।যার পালটা দিয়েছিল ইহুদি দেশটিও। তখনই লেবাননের জঙ্গি সংগঠনটিকে বড় মূল্য চোকানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইজরায়েল। আর যুদ্ধাস্ত্র নয়, এবার তাদের হাতিয়ার ইলেকট্রনিক গ্যাজেট।
রয়টার্স সূত্রে খবর, হেজবোল্লাকে নয়া যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে বুধবারই ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গ্যালান্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা যুদ্ধের একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছি। এর জন্য আমাদের সাহস, সংকল্প এবং অধ্যাবসায় প্রয়োজন। আমরা পরিকল্পনা মতো এগিয়ে যাব। হেজবোল্লাকে বড় মূল্য চোকাতে হবে।” সূত্রের খবর, প্রায় ৫ মাস আগে হেজবোল্লা তাইওয়ান থেকে ৫ হাজার পেজার আনিয়েছিল। সঙ্গে ছিল ওয়াকি-টকি, টেলিফোনও। ইরান ও লেবাননের অভিযোগ, সেগুলোতে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দেয় ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ। এই হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের লড়াই আরও ভয়ংকর রূপ নিল। গাজায় যুদ্ধ থামাতে যেখানে প্রতিনিয়ত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে মিশর, কাতার, সৌদি আরবের মত দেশ, সেখানে লেবাননের এই গ্যাজেট হামলা আরও উদ্বেগ বাড়াল বিশ্বের।